বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে আপনার যে বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে- লক্ষ্য উন্নতমানের উচ্চশিক্ষা, উপযুক্ত চাকরিপ্রাপ্তি কিংবা স্থায়ী অভিবাসন। দেশে শিক্ষা ও চাকুরির বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে দিন দিন বিদেশগমনেচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী, সুদূরপ্রসারী এবং বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা- হঠকারী সিদ্ধান্তগ্রহন বয়ে আনতে পারে হিতে বিপরীত ফল। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে যোগ্যতা যাচাই ও ভর্তিপদ্ধতি ভিন্ন হলেও সদৃশপূর্ণ ও অপরিহার্য কিছু বিষয় শিক্ষার্থীদের বিবেচনা করা উচিত-
Ø উদ্দেশ্য অনুযায়ী দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনঃ
·
উচ্চশিক্ষাঃ বিদেশে অধ্যয়নের উদ্দেশ্য শুধু উন্নতমানের উচ্চশিক্ষা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং, পছন্দের বিষয়ে সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা যাচাই করে ৪-১০টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা উচিত।
টাইমস হায়ার এডুকেশনের ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০২০: https://www.timeshigheredcation.com/world-university-rankings/2020/world-ranking#!/page/55/length/25/sort_by/rank/sort_order/asc/cols/stats
·
চাকুরি, স্থায়ী অধিবাসী বা নাগরিকত্ব লাভঃ এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং এর পাশাপাশি দেশটি অভিবাসন বা নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে নমনীয়তা,পদ্ধতিগত জটিলতা ও স্থায়ী অভিবাসনে ব্যয়ের পরিমান, কর্মক্ষেত্রে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এদিকগুলো বিবেচনা করলে শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, মালেশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধিক উপযুক্ত। অপরদিকে ডেনমার্ক, চীন, জাপান, দক্ষিন কোরিয়ার অভিবাসন প্রক্রিয়া বেশ জটিল ও কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত।
Ø বিষয় নির্বাচনঃ
বিদেশে উচ্চশিক্ষার অন্যতম সুবিধা- বিষয় নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক নমনীয়(Flexible)। শিক্ষার্থীরা পছন্দমতো বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য আবেদন করতে পারে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ১ম বর্ষ অধ্যয়নের পর বিষয় নির্বাচনের সুবিধা দেয়। রয়েছে পছন্দমাফিক একাধিক মেজর মাইনর বিষয় গ্রহন করার সুবিধা। অধ্যয়নকালে বিষয় পছন্দ না হলে পরিবর্তন করার সুযোগও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বা কার্যক্ষেত্র বিবেচনা করে উপযুক্ত বিষয় নির্বাচন করা উচিত।
Ø আর্থিক সামর্থ্য যাচাইঃ
দক্ষতা যাচাই পরিক্ষা থেকে শুরু করে বাইরে যাওয়ার প্রক্রিয়া, অধ্যয়ন বেশ ব্যয়বহুল।
·
যোগ্যতাযাচাই পরিক্ষায় অংশগ্রহনের ব্যয়ঃ পরিক্ষায় অংশ নিতে IELTSএ $140-$310, TOEFLএ $200, GRE Testএ $205-$150, SAT $52-$68 ইউএস ডলার সমমুল্যের রেজিষ্ট্রেশন ফি জমা দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিনামূল্যে ফলাফল পাঠানোর সুযোগ থাকলেও তা নির্দিষ্ট সময় ও সংখ্যা শর্তসাপেক্ষে।
·
সার্বিক ব্যয়ঃ শিক্ষার্থী্র সম্পূর্ণ শিক্ষাখরচ বহন করার সামর্থ্য থাকলে, ভিসা আবেদনের ১-৩ মাস পূর্বে ব্যাংক স্টেটমেন্টে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় অর্থ সম্পূর্ণ জমা রাখতে হবে। এতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ায় জটিলতা থাকে না।
আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে, সম্পূর্ন ব্যয় বহন করা সাধারন মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য। বহির্বিশ্বের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী ও বেসরকারীভাবে আংশিক/সম্পূর্ণ শিক্ষাবৃত্তির(Scholarship) ব্যবস্থা রয়েছে। হার্ভার্ডসহ স্বনামধন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করা কিছু শিক্ষার্থীর পড়াশোনা, যাতায়াত খরচ,থাকা-খাওয়ার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করে, তবে এমন সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশীপ পাওয়া বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পূর্বে উক্ত ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সাহায্য(Financial Aid) দেয় কি না,আর্থিক সাহায্য দিলে তা মোট ব্যয়ের কত অংশ তা বিবেচনা করতে হবে। বছরের বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্কলারশীপের অফার দেয়, Eduhub-এর ফেসবুকপেজ থেকে শিক্ষার্থীরা সহজেই স্কলারশীপসংক্রান্ত অফারগুলোর আপডেট জানতে পারবে।
Ø ভাষাগত ও শিক্ষাগত যোগ্যতযাচাইঃ
আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অধ্যয়নে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যোগ্যতাযাচাই। ইংরেজী মাতৃভাষা নয়,এমন
শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা যাচাইয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যাচাইপরিক্ষাগুলোর মধ্যে IELTS
ও
TOEFL অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র,কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের উক্তপর্যায়ে শিক্ষাগ্রহনের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য SAT, GRE, GMAT ইত্যাদি পরিক্ষার স্কোর নেওয়া হয়।
নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পেতে শিক্ষার্থীকে লেভেল এবং পছন্দের বিষয়ে অধ্যয়নে প্রযোজ্য যাচাইপরিক্ষাগুলোর প্রস্তুতি ও অংশ নিতে
হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে IELTS এবং
TOFEL উভয় পরিক্ষার স্কোর গ্রহনযোগ্য, সে ক্ষেত্রে যেকোনো একটি পরিক্ষায় অংশ নিলেই চলবে।
যোগ্যতাযাচাই পরিক্ষার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করতে অংশগ্রহনকারীর ছবি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা আবেদনকারীর পরিচয় নিশ্চিতকরনে পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাগজ প্রয়োজন হয়। এজন্য রেজিষ্ট্রেশনের পূর্বে শিক্ষার্থীকে উক্ত কাগজপত্র বিশেষ করে পাসপোর্ট তৈরী করে নেওয়া উচিত।
·
ভাষাগত যোগ্যতা
যাচাই পরিক্ষাঃ
o IELTS
(International English Language Testing System) : যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের
১০০০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান IELTS
পরিক্ষার ফলাফল দ্বারা আবেদনকারীর ইংরেজী
ভাষার দক্ষতা যাচাই করে।
উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের এক্যাডেমিক IELTS পরিক্ষায় অংশ নিতে হয়। লিসেনিং, রাইটিং, রিডিং এবং স্পিকিং-এই চারটি বিষয়ে কাগজে লিখিতভাবে(paper written) নেওয়া হয় IELTS পরিক্ষা। লিসেনিং, রাইটিং, রিডিং পরিক্ষা একইদিনে একটানা অনুষ্ঠিত হয়। স্পিকিং পরিক্ষা হয় এই পরিক্ষাগুলোর এক সপ্তাহ আগে/পরে এক দিন। লিসেনিংএ ৩০ মিনিট, রাইটিংএ ৬০ মিনিট, রিডিংএ ৬০ মিনিট, স্পিকিংএ ১৫ মিনিট-সর্বমোট ২ ঘন্টা ৪৫ মিনিটের পরিক্ষা। শিক্ষার্থীকে পরিক্ষায় প্রাপ্তনম্বরের উপর ভিত্তি করে ১-৯ এর মাঝে একটি ব্যান্ডস্কোর দেওয়া হয়। পাশ নম্বর নেই, তবে ৬-৯ ভালো ব্যান্ড স্কোর ধরা হয়।
o TOEFL(Test of English as a Foreign Language): যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি আবেদনকারী শিক্ষার্থীর TOEFL পরিক্ষার ফল বিবেচনা করে। ইটিএস আয়োজিত কম্পিউটার বেইজড এই পরিক্ষাটিও রিডিং,রাইটিং,লিসেনিং ও স্পিকিং-চারটি বিষয়ের সমন্বয়ে নেওয়া হয়। মোট চার ঘন্টার TOEFL পরিক্ষায় বরাদ্দ থাকে ১২০ নম্বর।
·
শিক্ষাগত
যোগ্যতা যাচাই পরিক্ষাঃ
o SAT:
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অনেক
বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকপর্যায়ে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত মান যাচায়ে SAT স্কোর নিয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সাথে স্যাট স্কোর জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, তেমন
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপ প্রদানে SAT স্কোর বিবেচনায় নেয়। SAT
এ ক্রিটিক্যাল রিডীং, ম্যাথ ও রাইটিং তিন
বিষয়ে মোট ২৪০০ নম্বরের পরিক্ষা দিতে হয়।
o GRE(Graduate
Record Examination) : যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে MS এবং Phd করতে ইচ্ছুক
শিক্ষার্থীদের থেকে GRE পরিক্ষার স্কোর চেয়ে থাকে।
মূলত সায়েন্সের কোনো সাবজেক্টে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির করতে
ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এ পরিক্ষাটি বেশি
দেয়। GRE
এ দুইধরনের পরিক্ষা
দেওয়া যায়-GRE General Test এবং GRE Subject Test ।
o GMAT(Graduate
Management Admission Test) : যুক্তরাষ্ট্রের
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে MBA করার জন্য প্রয়োজন হয় GMAT পরিক্ষার স্কোর। এটি মূলত GRE
এর আদলে বিজনেস স্টাডিজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত মান যাচাইয়ের পরিক্ষা।
এন্যালিটিক্যাল, ভার্বাল, কুয়ান্টিটিভ-এই
তিন বিষয়ের উপর মোট ৮০৬ নম্বরে
GMAT পরিক্ষা নেওয়া হয়।
বিদেশে
উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখে অনেকেই।
কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে, প্রচলিত ভুল ধারনার কারনে, বাস্তবজ্ঞানের
অভাবে বা ভুল পরামর্শে ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার’ স্বপ্নপূরণের ইতি ঘটে।
এ সমস্যাগুলো থেকে
উত্তরণে বাংলাদেশে অল্পকিছু ওয়েবসাইট, ইউটিউবার,মোটিভেটর
তথ্যপ্রদান/পরামর্শদানে কাজ করছে,যারমধ্যে ‘Eduhub’ অন্যতম।
Eduhub
বাংলাদেশে প্রথম ওয়েববেজড প্রতিষ্ঠান যেখানে একইসাথে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য,পরামর্শ,স্কলারশিপ
পেতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় একদম বিনামূল্যে।
Eduhub-এর
বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো-
Ø Eduhub-এ প্রদত্ত তথ্য-উপাত্ত, পরামর্শ এবং
গাইডলাইন গবেষনালব্ধ ও নির্ভরযোগ্য,
Ø Eduhub-এ শিক্ষার্থীরা সহজেই ইউএস, ইউকে,
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, মালেশিয়াসহ যেকোনো
দেশের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য, পরামর্শ ও
সহযোগীতা পাচ্ছে,
Ø প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সুশৃংখল
ও সুবিন্যস্তভাবে সমন্বিত করে Eduhub দিচ্ছে শ্রম
ও সময়সাশ্রয়ের সুবিধা,
Ø শিক্ষার্থীদের ভিসাসংক্রান্ত সাহায্য ও যোগ্যপ্রার্থীদের জন্য স্কলারশীপের
ব্যবস্থা করে দিচ্ছে Eduhub,
Ø Eduhub-এর এত এত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে (Free)।
বিস্তারিত জানতে ফোন করুন : ০১৭৬৮৩৬৭৪৭৭, ০১৮৪১৩৬৭৪৭৭, ০১৬৭৮৮২৪৪০০
Comments
Post a Comment